কথা সাহিত্যিকঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

লেখক পরিচিতিঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দ (বাংলাঃ ৩১ ভাদ্র ১২৮৩) হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে। পৈতৃক নিবাস মামুদপুর, উত্তর চব্বিশ পরগণা। পিতাঃ মতিলাল চট্টোপাধ্যায়। মাতাঃ ভুবনমোহিনী দেবী। বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ঔপন্যাসিকের ছেলেবেলা কাটে দারিদ্রোতার মধ্যে। ভাগলপুর দুর্গাচরণ এম.ই. স্কুল থেকে ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ (১৮৮৭)। মাধ্যমিকঃ ম্যাট্রিক (এন্ট্রাস ১৮৯৪), তেজনারায়ণ জুবিলি কলেজিয়েট স্কুল। উচ্চ মাধ্যমিকে ফি দিতে না পারায় এফ.এ পরীক্ষা দিতে পারেননি। চব্বিশ বছর বয়সে মনের ঝোঁকে সন্ন্যাসী হয়ে গৃহত্যাগ করেছিলেন শরৎচন্দ্র। সংগীতজ্ঞ হিসেবে খ্যাতির সূত্রে ঘটনাচক্রে এক জমিদারের বন্ধু হয়েছিলেন তিনি। জীবিকার তাগিদে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন বর্মা মুলুকে অর্থাৎ বর্তমান মিয়ানমারে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় অপরাজেয় কথাশিল্পী হিসেবে পরিচিত। মানুষের অন্তরের দুঃখ বেদনাকে অতি দরদের সঙ্গে চিত্রিত করার জন্য তিনি দরদি কথা সাহিত্যিক হিসেবেও পরিচিত। শরৎচন্দ্র তাঁর জীবনের নানা অভিজ্ঞতা ও বিচিত্র সব মানুষের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর বিভিন্ন উপন্যাসে। বিশেষ করে সমাজের নিচু তলার মানুষ তাঁর সৃষ্ট চরিত্রে অপূর্ব মহিমা নিয়ে চিত্রিত হয়েছে। কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের শিল্পীমানসের মৌলবৈশিষ্ট্য মানবতা ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা। শরৎচন্দ্রের প্রথম মুদ্রিত রচনা কুস্তলীন পুরস্কারপ্রাপ্ত মন্দির’ নামে একটি গল্প। তাঁর উপন্যাসে বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি অঙ্কনে তিনি অসামান্য দক্ষতা দেখিয়েছেন। তাঁর বহু উপন্যাস ভারতবর্ষের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত ও চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। তাঁর কয়েকটি উপন্যাস বিদেশি ভাষায়ও অনূদিত হয়েছে। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক (১৯২৩)। মন্দির গল্পের জন্য কুস্তলীন পুরস্কার (১৯০৩) পান। শরৎচন্দ্র ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জানুয়ারি কলকাতায় মারা যান।

তাঁর সাহিত্যকর্মঃ

উপন্যাসঃ

বড়দিদি (১৯০৭, প্রথম উপন্যাস), শ্রীকান্ত ( ১ম পর্ব-১৯১৭, ২য় পর্ব-১৯১৮, ৩য় পর্ব-১৯২৭, ৪র্থ পর্ব-১৯৩৩),পল্লী সমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), গৃহদাহ (১৯২০), দেনাপাওনা (১৯২৩), পথের দাবী (১৯২৬), বিরাজ বৌ, পরিণীতা, চন্দ্রনাথ, শেষপ্রশ্ন, শেষের পরিচয়, বামুনের মেয়ে, দত্তা, পণ্ডিত মশাই, বৈকুণ্ঠের উইল, বিপ্রদাস, নিষ্কৃতি ।

ছোটগল্পঃ

মন্দির (প্রথম গল্প), বিলাসী (১৯২০), মহেশ (১৯২৬), রামের সুমতি (১৯১৪), বিন্দুর ছেলে (১৯১৪), অভাগীর স্বর্গ (১৯২৬), অনুরাধা, সতী, মামলার ফল, মেজদিদি, ছবি ।

প্রবন্ধঃ

নারীর মূল্য (১৯২৩), স্বদেশ ও সাহিত্য (১৯৩২), তরুণের বিদ্রোহ (১৯১৯), স্বরাজ সাধনায় নারী, ভবিষ্যৎ বঙ্গ সাহিত্য।

নাটকঃ

ষোড়শী (১৯২৮, দেনা-পাওনা উপন্যাসের নাট্যরূপ), রমা (১৯২৮, পল্লী সমাজ উপন্যাসের নাট্যরূপ), বিজয়া (১৯৩৫, দত্তা উপন্যাসের নাট্যরূপ)।

নিয়মিত চাকরির বিজ্ঞপ্তি সহ শিক্ষা বিষয়ক আপডেট পেতে ডেইলি স্টাডি নিউজ ডট কম শিক্ষা বিষয়ক ব্লগের ফেসবুক পেজ এ লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন।

ডেইলি স্টাডি নিউজডেইলি স্টাডি নিউজ ডট কম শিক্ষা বিষয়ক ব্লগের সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News অনুসরণ করুন।