বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কবি পরিচিতিঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ শে বৈশাখ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতাঃ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মাতা : সারদা দেবী। পিতামহ : প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট (১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ) জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মারা যান।

শিক্ষাজীবন : রবীন্দ্রনাথ বাল্যকালে ওরিয়েন্টাল সেমিনারি স্কুল, নর্মাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমী, সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করলেও স্কুলের পাঠ শেষ করতে পারেননি। ১৭ বছর বয়সে ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ড গেলেও কোর্স সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ছোটগল্প রচয়িতা এবং শ্রেষ্ঠ শিল্পী। মূলত তাই লেখনীতেই বাংলা ছোটগল্পের উদ্ভব, বিকাশ ও সমৃদ্ধি ঘটেছে। তাঁর ছোটগল্প বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ ছোটগল্পগুলোর সমতুল্য। ১২৮৪ বঙ্গাব্দে মাত্র ষোল বছর বয়সে ‘ভিখারিনী’ গল্প রচনার মাধ্যমে ছোটগল্প লেখক হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর থেকে জীবনের প্রায় শেষ দিন পর্যন্ত দীর্ঘ চৌষট্টি বছরে তিনি অখণ্ড ‘গল্পগুচ্ছে’ সংকলিত ৯৫টি ছোটগল্প রচনা করেছেন। ‘মুসলমানীর গল্প’ তাঁর রচিত সর্বশেষ গল্প। পারিবারিক জমিদারি তদারকির সূত্রে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে বসবাসের কালই তাঁর ছোটগল্প রচনার স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচ্য। তিনি একই সময়ে ‘সোনার তরী’ কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলো রচনা করেন। ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ Song Offerings এর জন্য নোবেল পুরস্কার পান নভেম্বর ১৯১৩ সালে। গল্পকার হিসেবে তিনি যেমন বরেণ্য, ঔপন্যাসিক হিসেবেও বাংলা সাহিত্যে তাঁর স্থান সুনির্দিষ্ট। তাঁর রচিত ‘চোখের বালি’, গোরা, চতুরঙ্গ, ঘরে-বাইরে, শেষের কবিতা, যোগাযোগ প্রভৃতি উপন্যাসগুলো বাংলা উপন্যাস তথা বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। নাটক রচনার ক্ষেত্রেও তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব অবিসংবাদিত। রাজা, অচলায়তন, ডাকঘর, মুক্তধারা, কাঠ তাঁর উল্লেখযোগ্য নাট্যকর্ম।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রকাশিতঃ

কবিতাঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রকাশিত কবিতাগুলোর মধ্যে রয়েছে মানসী, সবুজের অভিযান, সোনার তরী, ১৪০০ সাল, চিত্রা, পরিচয়, চৈতালি, বলাকা, কল্পনা, খেয়া ও ক্ষণিকা ইত্যাদি।

ছোটগল্পঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য ছোটগল্প গল্প হল কঙ্কাল, নিশীথে, মণিহারা, গুপ্তধন, ক্ষুধিত পাষাণ, স্ত্রীর পত্র, নষ্টনীড়, কাবুলিওয়ালা, হৈমন্তী, সমাপ্তি, অপরিচিতা, দেনাপাওনা, মুসলমানীর গল্প ইত্যাদি।

উপন্যাসঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রকাশিত উপন্যাস গুলো হলঃ বৌ-ঠাকুরাণীর হাট (১৮৮৩), রাজর্ষি (১৮৮৭), চোখের বালি (১৯০৩), নৌকাডুবি (১৯০৬), প্রজাপতির নির্বন্ধ (১৯০৮), গোরা (১৯১০), ঘরে বাইরে (১৯১৬), চতুরঙ্গ (১৯১৬), যোগাযোগ (১৯২৯), শেষের কবিতা (১৯২৯), দুই বোন (১৯৩৩), মালঞ্চ (১৯৩৪) ও চার অধ্যায় (১৯৩৪)।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠান সমূহঃ

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ঃ ১৯০১ সালে বোলপুরের শান্তিনিকেতনে ব্রক্ষচর্যাশ্রম নামক বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠা করেন যা ১৯২১ সালে “বিশ্বভারতী” বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের একটি কেন্দ্রীয়  বিশ্ববিদ্যালয়।

রবীন্দ্র সেতুঃ রবীন্দ্র সেতু (পূর্বনাম হাওড়া ব্রিজ) হুগলি নদীর উপর অবস্থিত কলকাতা ও হাওড়া শহরের মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী সেতুগুলির মধ্যে অন্যতম হল রবীন্দ্র সেতু। ১৮৭৪ সালে প্রথম হাওড়া সেতু নির্মিত হয়। পরে ১৯৪৫ সালে পুরনো সেতুটির বদলে বর্তমান বহির্বাহু সেতুটির উদ্বোধন হয়। ১৯৬৫ সালের ১৪ জুন সেতুটির নাম পরিবর্তন করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে রবীন্দ্র সেতু রাখা হয়।

রবীন্দ্রসদনঃ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত একটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি প্রেক্ষাগৃহ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হল রবীন্দ্রসদন (পূর্বনাম রবীন্দ্রস্মরণী)। এটি দক্ষিণ কলকাতার নন্দন-রবীন্দ্রসদন সাংস্কৃতিক চত্বরে অবস্থিত।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ঃ কলকাতার একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৬২ সালের ৮ মে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল এই বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রকাশিত তথ্য সমূহ বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত।

নিয়মিত চাকরির বিজ্ঞপ্তি সহ শিক্ষা বিষয়ক আপডেট পেতে ডেইলি স্টাডি নিউজ ডট কম শিক্ষা বিষয়ক ব্লগের ফেসবুক পেজ এ লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন।

ডেইলি স্টাডি নিউজডেইলি স্টাডি নিউজ ডট কম শিক্ষা বিষয়ক ব্লগের সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News অনুসরণ করুন।